স্টাফ রিপোর্টার :
ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতির মাঠে রয়েছেন সাংসদ শামীম ওসমান। নানা কারণেই থাকেন আলোচনায়। অনেকে তাকে নিয়ে সমালোচনাও করেন যথাযথ কারণ দেখিয়ে। মানুষ সমালোচনার বাইরে নয় ; তাই বিভিন্ন সময়ে সমালোচনা শোনা গেছে তার বড় ভাই সাংসদ সেলিম ওসমানকে নিয়েও। তবে, দুহাত খুলে দান, উন্নয়ন, পরিকল্পনা ও আন্তরিকতার কারণে সেলিম ওসমান শামীম ওসমানের চেয়ে ভিন্ন-এমনটাই শোনা মানুষের মুখে মুখে।
পবিত্র রমজানে নগরবাসীকে স্বস্তি দিতে শহরের যানজট নিরসনের জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে সেলিম ওসমান সেই ভিন্নতার স্বাক্ষর রেখেছেন মোটা দাগে। তার এই অনুদান ও ট্রাফিক-পুলিশের নিরলস প্রচেষ্টায় পাল্টে গেছে নগরীর চিত্র। তাই সেলিম ওসমানের এই মহতি উদ্যোগের পরই ফতুল্লায় আলোচনা চলছে তারই ছোট ভাই শামীম ওসমানকে নিয়ে।
অনেকেই বলছেন, সেলিম ওসমানের মহতি উদ্যোগে নগরী থেকে যানজট কমে আসলেও শামীম ওসমানের ফতুল্লার রাজপথ থেকে অলিগলি সর্বত্রই যানজটে নাকাল। শুধু কী তাই? পরিকল্পিত উন্নয়ন নেই ফতুল্লায়। ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভঙ্গুর। বৃষ্টি হলেই সড়কে জমে হাঁটু জল। সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই শামীম ওসমানের। শামীম ওসমান যদি তার বড় ভাই সেলিম ওসমানের এই বিশেষ গুণে গুনান্নিত হতো, তাহলে হয়তো ফতুল্লাবাসীও উপকৃত হতো নানা ভাবে।
জানা গেছে, রাজনীতির মাঠে খুব একটা বিচরণ ছিলো না সেলিম ওসমানের। আপাদ মস্তক ব্যবসায়ী ছিলেন তিনি। বড় ভাই সাংসদ নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর তার শূন্যস্থান পূরণ করতেই মাঠে নামেন সেলিম ওসমান। অতঃপর দানবীর সাংসদ হিসেবে সর্বত্র পরিচিতি পান নিজ কর্মগুনে।
তার সমর্থকরা বলছেন, তিনি ভাবেন তার ‘রাজ্য’ (নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন) নিয়ে। সুন্দর ও সুশৃঙ্খল করে সাজাতে চান তার নগরীকে। তাইতো উন্নয়ন ও সমস্যা সমাধানে নিজ ভান্ডারে হাত দিতে কুন্ঠাবোধ করেন না সেলিম ওসমান। তবে তারই ছোট ভাই শামীম ওসমানের মধ্যে এই গুনাবলি ততটা নেই বলে অনেকেই বলে থাকেন। হয়তো বড় ভাই সেলিম ওসমানের মত মহৎ চিন্তার অধিকারি এখনো হতে পারেননি শামীম ওসমান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মহানুভবতার পরিচয় দিয়ে সেলিম ওসমান সকল বিরোধের অবসান চান। তিনি মেরুকরণের দেয়াল চুর্ন করে নগরীর উন্নয়নের স্বার্থে মেয়র আইভীকেও এক টেবিলে বসার আহবান জানিয়েছিলেন। পরিচ্ছন্ন নগরীর জন্য হকার বা দখলদারমুক্ত শহুরে ফুটপাত দেখতে চেয়েছেন। কিন্তু শামীম ওসমান পুরোপুরি ভিন্ন। তিনি ২০১১’র প্রথম সিটি নির্বাচনে পরাজয়ের পর প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছেন। তিনি মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে স্বদলবলে মাঠে নেমেছিলেন। ফুটপাতে অবৈধ দখলদারদের পক্ষ নিয়েছেন। এতে শহরে চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
যদিও সূত্র বলছে, চিন্তা ধারায় সমতুল্য না হলেও অর্থবৃত্তের কমতি নেই শামীম ওসমানের। ৯৬ সালের ষষ্ঠ জাতীয় নির্বাচনে প্রথম বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৩ সাল থেকে অদ্যবধি এই অঞ্চলের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শামীম ওসমান। দীর্ঘ সময়ে তিনি জাহাজ ও গণপরিবহন সহ বিভিন্ন ব্যবসায় আয় উন্নতি করেছেন। দেশের বাইরেও তার ব্যবসা রয়েছে বলে শোনা যায়। তার ঘনিষ্ঠরাই জানিয়েছেন, অর্থ সম্পদের কমতি নেই শামীম ওসমানের। যেমনটা নেই সেলিম ওসমানেরও। তবে সেলিম ওসমান তার নির্বাচনি এলাকার উন্নয়ন, সামাজিকতা, শিক্ষা ও প্রয়োজনীয় বিষয়ে যেভাবে দুহাত খুলে নিজ অর্থ ব্যায় করেছেন, তেমনটা করেননি সাংসদ শামীম ওসমান। তাই ফতুল্লাাবাসীর আক্ষেপ ; শামীম ওসমান যদি সেলিম ওসমানের মত ওই বিশেষ গুণে গুনান্নিত হতেন!